ঋতুপর্ণা এখন কলকাতায় শুটিং শুরু করেছেন। পরিচালক সানি রায়ের ‘সল্ট’ ছবির সৌজন্যেই কাজে ফিরলেন তিনি। এই ছবিতে তাকে মায়া নামে এক লেখিকার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। আর তার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করছেন চন্দন রায় সান্যাল। তবে তাঁর নতুন ছবি ‘সল্ট’ বাংলা নয়, হিন্দি। এই প্রথমবার চন্দন রায় স্যানালের সঙ্গে জুটি বাঁধছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। একদিকে যেমন জোরকদমে চলছে হিন্দি ছবির কাজ, অন্যদিকে আরও একটি খবরের জন্য সম্প্রতি শিরোনামে নায়িকা। টলিউডে গুঞ্জন, আগামী ছবিতে নাকি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও দেবশ্রী রায়ের সঙ্গে একই ছবিতে কাজ করতে চলেছেন ঋতুপর্ণা!
নতুন পরিচালক, নতুন জুটি নিযে ঋতুপর্ণা জানান, ‘ছবিতে আমার চরিত্রটা ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। কাজেই অভিনয়ের জায়গা রয়েছে অনেক। আর এই বিষয়ে আমি ভীষণ লোভী। সবসময় ভাবি নতুন কী করা যায়। পরিচালক বলেছেন, এই চরিত্রটায় দর্শকদের চমকে দিতে হবে। তাই এখনই বেশি কিছু বলতে পারব না।’
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ঋতুপর্ণা বলছেন, ‘এই প্রথম বাড়িতে অনেকটা সময় কাটাতে পেরেছি। সাইক্লিং করেছি ছেলে মেয়ের সঙ্গে, ঘরের কাজ তো রয়েছেই। আগে তো কাজের ব্যস্ততায় জানতামই না বাড়ির কোথায় কী থাকে। এখন সেটুকু অন্তত জানি। এই তো সেদিন বর প্রশ্ন করল বিছানার চাদরগুলো কোথায় আছে। উত্তরটা এই প্রথম বোধহয় দিতে পারলাম।’ হাসি সামলে ঋতুপর্ণা যোগ করলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির জন্য নিজেদের নিয়ে ভাবার, নিজেদের জন্য ভাবার অনেকটা সময় পেয়েছি আমরা। তবে আমি কিন্তু বাড়ি থেকেই রেকর্ডিং, শ্যুটিং করে গিয়েছি সমানে। বাড়িটাকে একটা মিনি স্টুডিও বানিয়ে ফেলেছিলাম।’
প্রথমবার পর্দায় একসঙ্গে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আর দেবশ্রী রায় অভিনয় করার ব্যাপারে ঋতুপর্ণা জানান, ‘এই বিষয়টি নিয়ে এখনও কথাবার্তা চলছে। সম্ভাবনার কথা আমি উড়িয়ে দিচ্ছি না। আমি আর প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সবসময় চেষ্টা করি বাংলা সিনেমার দর্শককে নতুন কিছু উপহার দিতে। আমাদের অভিনীত প্রাক্তন আর দৃষ্টিকোণ সুপারহিট হয়েছিল। এই রসায়নটা সবাই পছন্দ করেন। সেটা আমাদের গর্বের জায়গা। আমি বলব এটা ম্যাজিকাল। দর্শকদের কেবল নতুন কিছু উপহার দেওয়ার জন্যই আমাদের একসঙ্গে আসা, কারণ এই জুটিকে জনপ্রিয় তো দর্শকরাই করেছেন।’ অভিনয় নিয়ে ঋতুপর্ণা জানান, কাজের সময় আমরা চরিত্র হয়ে উঠি। সেখানে ব্যক্তিগত আবেগের জায়গা থাকে না।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চলে যাওয়ায় ব্যাপারে ঋতুপর্ণা বলছেন, ‘সৌমিত্রজ্যেঠু একজন দৃষ্টান্ত। শুধু আমি না, ওঁর সংস্পর্শে যাঁরাই এসেছেন, অনেক কিছু শিখেছেন। সারা জীবনটা উনি ওনার কাজের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। আমি আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে পারমিতার একদিন, বেলাশুরু, বেলাশেষে, বসু পরিবার… কত ছবি করেছি ওঁর সঙ্গে। কত স্মৃতি। তবে আমার মনে হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে আমাদের সেলিব্রেট করা উচিত। উনি বাংলা ছবির মেরুদণ্ড ছিলেন।’
টলিপাড়ায় রাজনীতি থেকে চিরকাল দূরে থাকার বিষয়ে ঋতুপর্ণা জানান, ‘রাজনীতিটা আমি একেবারেই বুঝি না। কর্মজীবনের রাজনীতিটাই কোনওদিন সামলাতে পারলাম না! দেশের রাজনীতির তো কোনও প্রশ্নই নেই। তবে হ্যাঁ আমি আমার আশেপাশের পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াকিবহাল থাকি। কেউ যদি কোনও বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত জানতে চান, সেটা আমি বলতে রাজি। আর যে কোনও ভালো কাজ বা ভালো প্রচারে আমি সবসময় যোগ দিতে চাই। তবে তার একমাত্র শর্ত হল, সেটা যেন মানুষের উপকারের জন্য হয়।’
টলিউড থেকে বলিউড তাঁর বিচরণ নিয়ে ঋতুপর্ণা বলছে, ‘নেপোটিজম বলব না, তবে ইন্ডাস্ট্রি আমায় ব্যর্থতা দেখিয়েছে, প্রত্যাখ্যান করেছে অনেকবার। কিন্তু আমি সেগুলো থেকে সবসময় বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছি। ওগুলোই তো সাফল্যের স্তম্ভ।’