অনলাইন ডেস্ক, ৫ জানুয়ারি।। অবশেষে কাতার ও সৌদি আরবের মধ্যকার সাড়ে ৩ বছরের বিরোধের অবসান হতে চলল। এতদিনের বিরোধ ভুলে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-ছানিকে উষ্ণ আলিঙ্গন করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস)।
গাল্ফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) সম্মেলনে যোগ দিতে শেখ তামিম বিমানে সৌদি শহর আল-উলায় পৌঁছালে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান দেশটির যুবরাজ। আলজাজিরার সম্প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কাতারি আমিরকে একেবারে বিমানের সিঁড়ির কাছে এসেই আলিঙ্গন করছেন সৌদি যুবরাজ।
কথিত সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে কাতারের সঙ্গে সৌদি এবং দেশটির আরব মিত্ররা কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন এবং বাণিজ্য ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি জল, স্থল ও আকাশ পথে অবরোধ আরোপ করে। এই পদক্ষেপের নেপথ্য ব্যক্তিদের অন্যতম মনে করা হয় এমবিএস এবং আমিরাতের আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদকে।
কাতার এবং সৌদি ও তার মিত্রদের মধ্যকার এই বিরোধের অবসান ঘটাতে দীর্ঘদিন ধরে মধ্যস্থতা করে আসছিল কুয়েত। অন্যদিকে শুরুতে কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধকে যথাযথ বললেও দেশটির ইরানের প্রতি ঝুঁকে পড়া ঠেকাতে মেয়াদের শেষে এসে বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমদ নাসের আল-সাবাহ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে এক ঘোষণায় বলেন, ‘কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফের প্রস্তাবে সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যে স্থল, জল ও আকাশ সীমা খুলে দেওয়ার ব্যাপারে দুই দেশ সম্মত হয়েছে। ’
জিসিসি সম্মেলনের আগের দিন সোমবার দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের এ ঘোষণা আসার পর সন্ধ্যায় প্রথমে স্থল সীমানা খুলে দেওয়া হয়। সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ নিয়ে সম্মেলন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ২০১৭ সালে সৌদির নেতৃত্বে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মিসর এ চার দেশ কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। বন্ধ করে দেওয়া হয় জল, স্থল ও আকাশসীমা।সন্ত্রাসবাদকে সহযোগিতা এবং ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির অভিযোগ আনা হয় দোহার বিরুদ্ধে। যদিও শুরু থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে কাতার।
শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও উপদেষ্টা জেরার্ড কুশনারের তৎপরতায় মধ্যপ্রাচ্যে এ রাজনৈতিক বিরোধের অবসান ঘটল। মঙ্গলবার সৌদি আরবে শুরু হতে যাওয়া জিসিসি সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেন কুশনার। সেখানে তার উপস্থিতিতে সৌদি ও কাতারের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।