অনলাইন ডেস্ক, ২৯ ডিসেম্বর।। চলতি বছরেই বিদায় নিয়েছেন ভারতীয় ফুটবলের দুই মহীরূহ প্রদীপ কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চুনী গোস্বামী। বছরের শেষ লগ্নে পৌঁছে এবার চলে গেলেন অলিম্পিয়ান নিখিল নন্দী। মঙ্গলবার তাঁর প্রয়াণ হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বয়সজনিত কারণে তিনি ভুগছিলেন। কয়ে মাস আগে আক্রান্ত হয়েছিলেন করোনাতেও। তার পরেও সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন বাড়িতে। ১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে তিনি ছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে ময়দানে। ১৯৫৬ মেলবোর্ন অলিম্পিকে ভারত চতুর্থ হয়েছিল৷ অলিম্পিক ফুটবলে সেরা পারফরম্যান্সের সাক্ষী ছিলেন নিখিলবাবু৷
সেই সময়ের অলিম্পিয়ানরা অধিকাংশই প্রয়াত৷ যাঁরা রয়েছেন , তাঁরা অধিকাংশই গৃহবন্দি৷ ব্যতিক্রমী চরিত্র নিখিল৷ ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেও বাচ্চাদের কোচিং করাতেন দমদম অঞ্চলে৷ সপ্তাহে ছ’দিন ধরে প্রায় দু’টো গ্রুপে পঞ্চাশ জন কিশোরকে কোচিং করিয়েছেন দীর্ঘ সময়৷ শিক্ষার্থীদের থেকে কোনও টাকা নিতেন না৷ বহু আলোচিত ১৯৫৬ অলিম্পিকে ভারতের চতুর্থ হওয়ার পিছনেও বড় ভূমিকা ছিল নিখিলের৷ তিনিই ছিলেন এক ঐতিহাসিক বাঁকের সাক্ষী৷ ঠিক আগের অলিম্পিকে যুগোস্লাভিয়া ১০ -১ গোলে হারিয়েছিল ভারতকে৷ সেই সময় জাতীয় দলের কোচ রহিম সাহেব দলকে খেলাতেন ৩-২-৫ ছকে৷ বেশ ভয়েই তিনি ৪ ডিসেম্বর যুগোস্লাভদের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল ম্যাচে পাল্টে দেন ছক৷ দলকে খেলান ৩-৩-৪ কৌশলে৷
নিখিল নন্দীর মার্কিং করার ক্ষমতার জন্যই তাঁকে প্রথম টিমে আনা হয় মাঝমাঠে৷ ওই ম্যাচে ভারত ১-৪ হারে৷ কিন্তু তাঁর ফুটবলের রীতিমতো প্রশংসা করেছিলেন স্ট্যানলি ম্যাথুস৷ সে সময় অধিনায়ক বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় দলে নিয়মিত সুযোগ পেতেন না৷ যুগোস্লাভ ম্যাচে প্রথম টিমে ছিলেন না৷ মাঝমাঠে খেলেন নিখিল , নুর মহম্মদ , কেম্পিয়া৷ ফরোয়ার্ড লাইনে পিকে , বলরাম , কিট্টু এবং নেভিল ডি ’সুজা৷ সেই অলিম্পিক্সে একটা ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছিলেন তিনি৷ নিখিল নন্দী সেই বিরল পরিবারের লোক , যেখান থেকে চার ভাই ভারতীয় ফুটবল টিমে খেলেছেন৷ দুই ভাই খেলেছেন অলিম্পিক্সে৷ নিখিলবাবুর নেতৃত্ব এবং কোচিংয়ে ইস্টার্ন রেল দলে খেলেছেন পিকে বন্দ্যোপাধ্য্যায়ও৷