অনলাইন ডেস্ক, ২৯ ডিসেম্বর।। অধিনায়ক হিসেবে বিরাট কোহলি যতটা আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে দলকে পরিচালনা করেন, ঠিক তার উল্টো মেরুতে দাঁড়িয়ে অজিঙ্ক রাহানে। তিনি ঠান্ডা মাথায়, ধুরন্ধর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চেপে বসতে পারেন প্রতিপক্ষের উপরে। ফলে তাঁদের নিয়ে কোনও তুলনা চলতে পারে না। মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়াকে আট উইকেটে হারিয়ে টেস্ট সিরিজে সমতায় ফেরার পরে এমনই ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় দলের হেড কোচ রবি শাস্ত্রী। ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “যদি সে ভাবে দেখা যায়, তা হলে বলব অধিনায়ক হিসেবে রাহানে অনেক বেশি ধুরন্ধর এবং ও ম্যাচের গতিপ্রকৃতি খুব ভাল পড়তে পারে। সহজেই অনুমান করতে পারে, খেলা কোন দিকে গড়াতে পারে।
ওর ওই শীতল মনোভাবটাই কিন্তু প্রতিপক্ষকে বিপদে ফেলে দিতে যথেষ্ট।” আরও বলেছেন, “ঠান্ডা মাথার ছেলে বলেই ও দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটার শুভমন গিল এবং মহম্মদ সিরাজকে নিজের মতো করে ব্যবহার করতে পেরেছে। তারই সঙ্গে গোটা বোলিং ব্রিগেডকে দারুণ ভাবে পরিচালনা করেছে। ফলে উমেশের মতো বোলার চোটের কারণে বেরিয়ে গেলেও দলের উপরে তার কোনও প্রভাব পড়তে দেয়নি।
হলে কোহলির সঙ্গে রাহানের নেতৃত্বের তুলনা কী ভাবে করা উচিত? শাস্ত্রী বলেছেন, “বিরাট খুবই আবেগপ্রবণ। ও খেলার সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায় এবং স্বাভাবিক নিয়মেই ওর আচরণে আক্রমণাত্মক মনোভাব বাইরে চলে আসে। রাহানে ঠান্ডা মাথায় গোটা ব্যাপারটা সামলাতে পছন্দ করে। ঘটনা হল, দুজনেই খুব ভাল অধিনায়ক। তবে এটা নিয়ে কোনও তুলনা হতে পারে না। বিরাট এবং রাহানে নিজেদের চরিত্র অনুযায়ী ক্রিকেটকে দেখে। ফলে সেখানে কে এগিয়ে, সেটা বলার প্রয়োজনও পড়ে না।” রাহানের ১১২ রানের ইনিংসই যে ভারতের সমতায় ফেরার পথ পরিষ্কার করে দিয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন কোচ শাস্ত্রীও।
তিনি বলেছেন, “কী অকল্পনীয় মনোযোগ নিয়ে ও এই ইনিংসটা খেলেছে, তা ভাষায় বলে বোঝানো সম্ভব নয়। এই ধরনের বড় মঞ্চে কিছু করতে হলে কী ধরনের শৃঙ্খলার প্রয়োজন, সেটা সকলকে দেখিয়ে দিয়েছে রাহানে। ও যখন ব্যাটিং করতে নেমেছিল, ভারতের স্কোর ছিল ৬০-২। খুব সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি ও-ই ব্যাট করতে নেমেছিল। আকাশ মেঘলা ছিল, তার উপরে ছিল দলের সমস্ত দায়িত্ব। তার মধ্যেই ও ছয় ঘণ্টা ধরে ব্যাটিং করে গিয়েছে। অবিশ্বাস্য মনঃসংযোগ না থাকলে এটা সম্ভব নয়। আমি বিশ্বাস করি, রাহানের ওই ১১২ রানের ইনিংসই এই টেস্টের টার্নিং পয়েন্ট।”