অনলাইন ডেস্ক, ২৮ ডিসেম্বর।। দেশে-বিদেশে সর্বত্রই রতন টাটা একটি পরিচিত নাম। এই প্রবীণ শিল্পপতির দাবি, পারিবারিক সূত্রে তিনি শুধুমাত্র টাটা উপাধি পেয়েছিলেন। বাকি সব কিছুই তিনি নিজের চেষ্টায় অর্জন করেছেন। সোমবার রতন টাটা ৮৩ বছরে পদার্পণ করলেন। নিজের জন্মদিনে অকপট ভাষায় এই প্রবীণ মানুষটি জানালেন, খুব ছোট বয়সেই তিনি তীব্র পারিবারিক সমস্যায় পড়েছিলেন। সে সময় ঠাকুমা পাশে না দাঁড়ালে হয়তো তিনি হারিয়ে যেতেন। এই শিল্পপতি জানিয়েছেন, ১৯৪৮-এ তাঁর বাবা ও মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
তখন তাঁর বয়স মাত্র ১০ বছর। সে সময় দুই নাতিকে নিজের কাছে রাখবেন বলে ঠিক করেছিলেন ঠাকুমা নবজিভাই। এরপর রতন টাটা ও তাঁর ভাই ঠাকুমার কাছেই মানুষ হন। ঠাকুমার বিভিন্ন পরামর্শ ও উপদেশই তাঁকে জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক জায়গায় নিজের জীবনে ঠাকুমার অবদানের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। এই প্রবীণ শিল্পপতি জানিয়েছেন, ঠাকুমা না থাকলে তিনি আজ এই জায়গায় আসতে পারতেন না। ঠাকুমার কথাগুলি তাঁকে জীবনে সাফল্য এনে দিয়েছে। ঠাকুমার কথাগুলি তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন বলেই আজ এই সাফল্য। নিজের জীবন সম্পর্কে রতন টাটা বলেছেন, মা বাবার বিবাহ বিচ্ছেদের পর তাঁর জীবনটাই বদলে গিয়েছিল। কারণ সে সময় বিবাহ বিচ্ছেদ আজকের দিনের মত এত সহজ ও সাধারণ ব্যাপার ছিল না।
বিচ্ছেদের পর তাঁর মা দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন। এরপর স্কুলেও তাঁদের বিভিন্ন কটূক্তির মুখে পড়তে হত। এ বিষয়ে ঠাকুমাকে নালিশ জানালে তিনি বলতেন, মর্যাদা রক্ষাই সবথেকে বড় ব্যাপার। ঠাকুমা শিখিয়েছিলেন, কখন কথা বলতে হয় আর কখন চুপ করে শুনতে হয়। ঠাকুমার এই পরামর্শ আমি আজীবন মেনে চলেছি। আমি মনে করি, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন মর্যাদা রক্ষা করে চলাই সবচেয়ে বড় কথা। তিনি আরও বলেন বাবা ও তাঁর পছন্দের বিষয়টি ছিল প্রায় বিপরীত। বাবা চাইতেন আমি বেহালা শিখি। কিন্তু আমার বরাবর পিয়ানোর প্রতি ভালোবাসা ছিল।
বাবার ইচ্ছে ছিল, আমি ব্রিটেনে পড়তে যাব। কিন্তু তিনি চেয়েছিলেন আমেরিকায় যেতে। তিনি আর্কিটেক্ট হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাবার ইচ্ছে ছিল তিনি ইঞ্জিনিয়ার হবেন। তবে তাঁর বাবাও ঠাকুমার কথার বিশেষ মর্যাদা দিতেন। তাঁর ব্যাপারে সর্বদাই বাবা ও ঠাকুমার মধ্যে একটা লড়াই চলত। তবে শেষকথা শেষ পর্যন্ত ঠাকুমাই বলতেন। ঠাকুমা না থাকলে তিনি কখনওই আজকের এই জায়গায় আসতে পারতেন না।