অনলাইন ডেস্ক, ২৬ ডিসেম্বর।। বয়স ৬৪। চাকরি করতেন স্টেট ব্যাঙ্কে। অবসর নেওয়ার পর নতুন এক প্রস্তুতি শুরু করলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ক কর্মী জয় কিশোর প্রধান। তাঁর দীর্ঘদিনের ইচ্ছে ছিল ডাক্তারি পড়বেন। কিন্তু ডাক্তারি পড়ব বললেই তো আর পড়া যায় না। এর জন্য দিতে হয় নিট পরীক্ষা। তাই জয় কিশোর মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। শুধু পরীক্ষায় বসাই নয়, নিট কোয়ালিফাই করেছেন তিনি। অর্থাৎ নিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এবার ডাক্তারি পাঠক্রমে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন এই তরুণ কিশোর। ওড়িশার সুরেন্দ্র সাঁই ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন তিনি। সাধারণত উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর ছেলেমেয়েরা নিট পরীক্ষায় বসে থাকেন।
অত্যন্ত কঠিন এই পরীক্ষা পাস করার জন্য তাঁদের অনেক ঘাম ঝরাতে হয়। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত জয় দেখিয়ে দিলেন বয়স কোনও কাজেই বাধা নয়। উল্লেখ্য, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ডেপুটি ম্যানেজার পদ থেকে অবসর নিয়েছেন জয়। চিকিৎসক হবেন, এটা তাঁর কিশোর বেলার স্বপ্ন বলে জয় নিজেই জানিয়েছেন। জয় জানিয়েছেন, আইএসসি পাশ করার পর তিনি মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় পাস করতে পারেননি। এরপর স্নাতক কোর্স উত্তীর্ণ হয়ে তিনি একটি স্কুলে চাকরি পান। সেখান থেকেই যোগ দেন ব্যাঙ্কে। ১৯৮৩-তে স্টেট ব্যাঙ্কের ডেপুটি ম্যানেজার পদ থেকে অবসর নেন তিনি। ব্যাঙ্কের চাকরিতে যোগ দিলেও তাঁর মাথা থেকে কখনওই মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসার কথা মুছে যায়নি। জয় জানিয়েছেন, ২০১৬-য় অবসর নেওয়ার পর তিনি নিটের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন।
শেষ পর্যন্ত নিট পাশ করেই তিনি ডাক্তারি কোর্সে ভর্তি হয়েছেন।নতুন করে কোন চাকরির জন্য নয়, গরিব মানুষদের সেবা করাই তাঁর মূল উদ্দেশ্য বলে জয়কিশোর জানিয়েছেন। এই বয়সেও কি নিট দেওয়ার অনুমতি পাওয়া যায়? এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে সুরেন্দ্র সাঁই ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ডিন জানিয়েছেন, এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য বয়সের কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই। উল্লেখ্য, জয়কিশোরের দুই জমজ মেয়ে ছিল। যারা নিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সম্প্রতি দুই মেয়ের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। জয় জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের ছিল ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। মেয়ের সেই স্বপ্ন তিনি পূরণ করবেন।