অনলাইন ডেস্ক, ১৮ ডিসেম্বর।। পরীক্ষার আগের রাত জেগে পড়াশোনা করেন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। এর উদ্দেশ্য বেশিকিছু শেখা কিংবা পুরনো পড়া আরেকবার ঝালিয়ে নেওয়া। কিন্তু এতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি বলে সতর্ক করছেন মনোবিদরা। তাদের মতে, অপর্যাপ্ত ঘুম নতুন কিছু মনে রাখার সক্ষমতা যেমন কমিয়ে দেয়, তেমনি জানা বিষয়ও বিস্মৃত করে।
‘স্মৃতির ওপর ঘুম কেমন প্রভাব ফেলে’ এনিয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাজ্যের রয়েল হলোওয়ে ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক জ্যাক তামিনেন। এতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের একটি দল নতুন শব্দ শিখে সারারাত জেগে ছিলেন। পরে কয়েকদিন এবং কয়েক সপ্তাহ তাদের শব্দ মনে রাখার ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়। অন্যদিকে নিয়মমতো ঘুমিয়েছেন এমন আরেক দল শিক্ষার্থীও এ পরীক্ষায় অংশ নেন। তুলনা করে দেখা গেছে, দুটি দলের শব্দ মনে রাখার মধ্যে বিস্তর পার্থক্য।
জ্যাক তামিনেন বলেন, ঘুম মানুষের শেখার প্রক্রিয়ার একটি কেন্দ্রীয় অংশ। পড়া শেষে আপনি যখন ঘুমিয়ে পড়েন, তখনও মস্তিষ্কের পড়াশোনা চলতে থাকে। আপনার হয়ে এটি কাজ করে। তাই পর্যাপ্ত না ঘুমালে আপনি পড়ায় যে সময় দেন, তার পূর্ণ সুফল পাবেন না।
জ্যাক তামিনেনের ঘুম গবেষণাগারে ইইজি মেশিনের মাধ্যমে মনিটরে শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কের সক্রিয়তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এতে ব্রেনের বিভিন্ন অংশের সক্রিয়তা ছাড়াও পেশির টান, আই মুভমেন্ট দেখা হয়। গবেষণার উপাত্ত বিশ্লেষণে জানা যায়, যারা নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুমান তাদের নতুন কিছু ধারণ করার সক্ষমতা বেশি।
কানাডার অটোয়া ইউনিভার্সিটির স্লিপ অ্যান্ড ড্রিম ল্যাবের আরেক গবেষণা বলছে, শিক্ষার্থীদের ফ্রেঞ্চ ভাষা শেখার স্বপ্ন তাদের বাস্তবের ভাষা শেখার সঙ্গে মস্তিষ্কের নতুন সংযোগ স্থাপনে সমর্থ হয়েছে। ঘুম সারা জীবনব্যাপীই স্মৃতি ও শেখার প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত ও নিয়মিত ঘুমের গুরুত্ব আরও বেশি।