অনলাইন ডেস্ক, ১৭ ডিসেম্বর।। এতদিন ই-মেইল বা এসএমএস-এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন টোপ দিয়ে চলত প্রতারণা। প্রতারকরা এবার হোয়াটস অ্যাপ এবং টেলিগ্রামের মত মাধ্যমকেও প্রতারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে।
সম্প্রতি বেশ কিছু জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে, হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে মানুষকে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কোথাওবা কোন জিনিস কিনলে বড় অঙ্কের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই মেসেজের ফাঁদে পা দিয়ে তাঁরা সর্বস্ব খুইয়েছেন।
সম্প্রতি হোয়াটস অ্যাপে একটি মেসেজে লেখা ছিল বাড়িতে বসে কাজ করে প্রতিদিন ৫০০০ টাকা রোজগার করুন। এই মেসেজের ফাঁদেই পা দিয়ে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে যাবতীয় সঞ্চয় খুইয়েছেন এক ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে, এ ধরনের মেসেজের সঙ্গেই থাকে একটি সন্দেহজনক লিঙ্ক। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই এটিএম পিন সহ অন্যান্য তথ্য চাওয়া হয়। করোনাজনিত কারণে অনেক মানুষই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাই তাঁরা সহজেই চাকরির বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়েছেন। প্রতারকরা সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু চাকরি জোটা তো দূরের কথা, বরং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যেটুকু সঞ্চয় ছিল তাও মুহুর্তের মধ্যে উড়ে গিয়েছে।
দেশের চেক পয়েন্ট সফটওয়্যার টেকনোলজির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুন্দর এন বালাসুব্রমনিয়াম বলেছেন, প্রতারকরা নিয়মিত তাদের লোক ঠকানোর পদ্ধতি পাল্টে ফেলছে। করোনার সময় সাইবার ক্রাইমের ঘটনা অনেক বেড়ে গিয়েছে। বর্তমানে প্রতারকরা হোয়াটস অ্যাপ বা টেলিগ্রামের মত মাধ্যমে চাকরির প্রস্তাব দেয়।
সেখানে একটি লিঙ্ক দেওয়া থাকে। ওই লিঙ্ক আসলে একটি নকল অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার লিঙ্ক। এখানে ক্লিক করে কোনও তথ্য দিলেই আর্থিক তছরুপের আশঙ্কা থাকে। সুব্রমনিয়ম আরও জানান, ওই লিঙ্কে একবার ক্লিক করলে একটি ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনে ডাউনলোড হয়ে যায়। এতে স্মার্টফোন থেকে অনেক জরুরি তথ্য প্রতারকদের যাচ্ছে পৌঁছে যায়।
এই তথ্যের বেশির ভাগটাই ব্যাঙ্ক বা আর্থিক লেনদেন সম্পর্কিত। আর একবার ওই তথ্য পেয়ে গেলে ব্যাঙ্ক একাউন্ট সাফ করে দেওয়া প্রতারকদের কাছে দু মিনিটের কাজ। আবার যেসব মেসেজে কোন লিঙ্ক থাকে না সেখানে থাকে নকল বা ভুয়ো ওয়েবসাইটের ঠিকানা। সেখানে যেসব তথ্য দেওয়া হয় সেগুলি অবৈধভাবে কাজে লাগানো হয়।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এ ধরনের কোন মেসেজ এলে সেগুলি এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধির কাজ। অর্থাৎ এ ধরনের কোনও লিঙ্কে ক্লিক করা উচিত নয়। সাধারণ মানুষকে এটা বুঝতে হবে যে, বর্তমানে কোন কিছুই বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। দেশে যেখানে কোটি কোটি মানুষ বেকার সেখানে এভাবে চাকরি পাওয়া সম্ভব নয়।