অনলাইন ডেস্ক, ১৭ ডিসেম্বর।। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকদের চিহ্নিত করা বা ট্রেসিংয়ের কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকজনকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান মন্ত্রক।
মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা আক্রান্তদের বেশিরভাগের শরীরে কোনও উপসর্গ নেই। তাই রোগ হলেও সেটা জানা যাচ্ছে না। এর ফলেই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে অনেক বেশি মানুষের মধ্যে। বাড়ছে ট্রান্সমিশন রেটও। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান থেকে জানা গিয়েছে, একজন করোনা রোগীর থেকে অন্তত ৯০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষকেই চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।
দিল্লি ও কেরলে একজন করোনা আক্রান্ত থেকে কমপক্ষে ২৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। যাদের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে এই সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি। এই দুই রাজ্যে একজন আক্রান্তের সংস্পর্শে এসেছেন ৩০০-র বেশি মানুষ। কিন্তু তাদের কাউকেই শনাক্ত করা যায়নি।
কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানমন্ত্রকের করোনা সংক্রান্ত কমিটির সদস্য ও আইআইটি কানপুরের কম্পিউটার সায়েন্সের গবেষক মনীন্দ্র আগরওয়াল বলেছেন, বেশিরভাগ রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা মানুষের সংখ্যা ৭০ থেকে ১২০-র মধ্যে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকদের চিহ্নিত করার জন্য করোনা পরীক্ষা বাড়ানোর কথা বলেছেন আগরওয়াল। বিজ্ঞান মন্ত্রকের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, প্রতি ১০ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে ৯ জনই উপসর্গহীন।
অর্থাৎ শরীরে করোনা ভাইরাস থাকলেও কোনও লক্ষণই নেই। ফলে বুঝতেই পারছেন না যে, তাঁরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই সব মানুষের সংস্পর্শে আসা মানুষজনই দ্রুত করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এমন রোগীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে সেরো সার্ভেতে।
রক্তে অ্যান্টিবডির পরিমাণ দেখে বোঝা গিয়েছে, তাঁরা কোনও এক সময় এই ভাইরাসের সংস্পর্শে এসে ছিলেন। তবে ভাইরাল লোড কম থাকায় তাঁরা কোনো জটিল সমস্যায় পড়েননি। এর আগে এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ঠিক মতো করোনা পরীক্ষা না হওয়ায় গোটা দেশে ৩৮ লাখের বেশি রোগীকে চিহ্নিত করা যায়নি।
বিহার, তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্রের মত কয়েকটি রাজ্যে বেশ কয়েক লাখ আক্রান্তকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। মহারাষ্ট্রে ৬ লাখ, দিল্লিতে ৪ লাখ, তেলেঙ্গানা বিহার অন্ধ্রপ্রদেশ ও কেরলে ৩ লাখ এবং পশ্চিমবঙ্গে ১লাখের কিছু বেশি করোনা আক্রান্তকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি বলে মন্ত্রক জানিয়েছে।