স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৫ ডিসেম্বর।। ঠিকঠাক মত শীত শুরু হওয়ার আগেই শীতঘুমে রাজ্যের খাদ্য দপ্তর৷ পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি যেখানে আকাশ ছোঁয়া সেই জায়গায় তিন সপ্তাহ ধরে দপ্তরের তরফে কোন প্রকার অভিযান নেই৷
হঠাৎ করে কেন চুপসে গেল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা সে সম্পর্কে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না৷ ইতিমধ্যেই শীতের সবজি রাজ্যের বাজারে উঠেছে৷ শাকসবজির ফলন সম্পর্কে কোনও হতাশার কথা ব্যক্ত করেনি খাদ্য দপ্তর৷ বাজারে শাকসবজি উঠেছে৷ কিন্তু সেগুলোর দাম অস্বাভাবিক৷ ক্রেতারা বিভিন্ন শাক সবজি কিনতে পারছেন না৷
কেন শাকসবজির দাম এখন কমল না সেই প্রশ্ণের উত্তরে বিক্রেতাদের তরফে নানান অজুহাত৷ তাদের বক্তব্য পেট্রোল ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে শাকসবজি আন নেওয়ার ক্ষেত্রে পরিবহন খরচ অনেকটা বেড়ে গেছে৷ তাই বিক্রি করার ক্ষেত্রে শাক সবজির দাম বাড়াতে হয়েছে৷ কেননা যেটুকু খরচ পরিবহনের ক্ষেত্রে চলে গেছে সেই খরচটুকু তুলতে হবে৷ এদিকে একাংশ ব্যবসায়ী অবশ্য বৃষ্টির গল্প আগের মতোই করছেন৷ বৃষ্টিতে ফসল নাকি মার খেয়েছিল৷ তাতে শাকসবজিরও ক্ষতি হয়েছিল।
তবে যাই হোক শাক সবজির বাজার অর্থাৎ গরিব মানুষের বাজার হাতের নাগালের বাইরে চলে গেলে ও শীতঘুম ভালোই কাটছে খাদ্য দপ্তরের ভিজিলেন্স টিমের৷ বিশেষ করে রাজধানীর বাজারে একটু কষ্ট করে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সবজি কত ধরে বিক্রি হচ্ছে সেটা খোঁজ নেবারও প্রয়োজন মনে করছেন না ভোক্তা সচেতক স্থানীয় প্রশাসন এবং খাদ্য দপ্তরের টিম৷
স্বাভাবিক কারণেই এতে বিরক্তি বেড়েছে সচেতন মহলের মধ্যে৷ তাদের কথা একটাই বাজারে বছর ধরে কোন লাগাম নেই৷ চলতি বছর বাজারে যা খুশি তা চলেছে৷ রাজধানীর প্রধান বাজার মহারাজগঞ্জ বাজারে একই অবস্থা৷ বটতলা বাজারেও একই দশা৷ ব্যবসায়ীদের একটা অংশ যা খুশি তা করছে৷ ক্রেতাদের সুবিধা অসুবিধার প্রতি তাদের বিশেষ কোনো লক্ষ্য নেই৷
চলতি বছর যেখানে লকডাউনের ফলে মানুষের আর্থিক অবস্থা রীতিমতো সংকটজনক সে জায়গায় রাজধানীর প্রধান বাজারগুলির এই দুর্দশা৷ একাংশ ব্যবসায়ীদের তরফে অবশ্য বলাবলি শুরু হয়েছে লকডাউনের ফলে ব্যবসায়ীরাও মার খেয়েছে৷ সুতরাং ব্যবসার মধ্য দিয়েই লোকসান তুলে আনতে হবে৷
কিন্তু কথা হলো কেন সাধারণ ভোক্তদের পেটে কেন এক্ষেত্রে লাথি মারা হবে৷ সাধারণ গরিব মানুষের দোষটা কোথায়? তাদেরকে তো খেয়েদেয়ে বাঁচতে হবে? সার্বিক বিষয় নিয়ে রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে৷ গত কয়েক মাস ধরে অত্যন্ত লক্ষণীয় বিষয় হলো খাদ্য দপ্তরের ভিজিল্যান্স টিম নামকাওয়াস্তেই তাদের অভিযান চালাচ্ছে৷
বিশেষ করে নিয়মিতভাবে বাজারগুলিতে অভিযান চালানোর ইচ্ছে তাদের নেই৷ যদিও এই লকডাউনের পরিপ্রেক্ষিতে সময়কালে নিয়মিত নজরদারির ব্যাপারটি অত্যন্ত জরুরী৷ কিন্তু কেন দপ্তরের টিম এক্ষেত্রে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে সেটাই বোঝা যাচ্ছে না৷ জানা গেছে এই মুহূর্তে পিকনিকের মরশুমকে সামনে রেখে মাছ-মাংস সহ সবজিতে দাম বাড়িয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷
এ কারণেই বেশকিছু বাজারে একই সময়ে একই জিনিসের ভিন্ন ভিন্ন মূল্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ এসব কিছুরই খোঁজ খবর রাখছে না খাদ্য দপ্তর৷ জনস্বার্থে কেন এই অনীহা? কাদের স্বার্থে ভিজিল্যান্স টিম আসলে কাজ করছে, সেই প্রশ্ণটিই এখন জোরালো হয়ে উঠেছে৷