স্টাফ রিপোর্টার, উদয়পুর, ১৪ ডিসেম্বর৷৷ গত শনিবার পনেরোটি সেগুন গাছের সদ্য কাটা লগবোঝাই করে আনা হয় উদয়পুর ধবজনগর কাঠের মিলে৷ তাও আবার একবারে পুলিশের গাড়িতে করে৷ পুলিশের গাড়ির নাম্বার টিআর -০৩ -০৯৮৪৷
এই পুলিশ গাড়ি দিয়ে লগগুলির বহন করার কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকায় মিল কর্তৃপক্ষ কাঠ চেরাই কলে স- মিলে লগগুলি প্রবেশ করতে দেয়নি এবং লগগুলি চেরাই করতে অপারগ বলে জানিয়ে দেয়৷ পুলিশের গাড়ির চালকের ধমকিকে উপেক্ষা করে চেরাই কল কর্মীরা কাঠ কোন মতেই চেরাই করবেন না বলে জানিয়ে দিলে এই গাড়িটি লগ সহ ধবজনগর পুলিশ লাইনে নিয়ে রাখা হয়৷ পরের দিন অর্থাৎ গতকাল রবিবার পুনরায় ওই স মিলেই নেওয়া হয় ওই সদ্য কাটা সেগুন গাছের লগ বোঝাই গাড়িটিকে৷
এই সংবাদ সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে যাওয়া মাত্রই সাংবাদিকরা যথা স্থানে যথা সময়ে পুলিশের গাড়িতে লগবোঝাই গাড়িটি দেখে পুলিশের গাড়ির চালককে জিজ্ঞেস করতেই পুলিশের লগ বোঝাই গাড়ির চালক সজোরে গাড়ি চালিয়ে সোজা পুলিশ লাইনে গাড়িটিকে নিদিষ্ট স্থানেরেখে দেন৷ সাংবাদিকরাও লগ বোঝাই গাড়ির পেছনে ধাওয়া করে৷ লগ বোঝাই গাড়িটির হাদিস পেয়ে এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন৷
এ বিষয়ে উদয়পুর মহকুমা বন আধিকারিক কমল ভৌমিককে প্রশ্ণ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং বলেন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পেছনে এই কেস করলে ওনি কি পারবেন৷ সাংবাদিকদের প্রশ্ণ এড়াতে না পেরে দায়সারা ভাবে পুলিশ লাইনে ফরেস্টার সহ কিছু বনকর্মীদের সেখানে পাঠিয়েছেন গাড়িটি আটক করার জন্য৷ কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে পুলিশ লাইনে বন দপ্তরের কর্মী সহ আধিকারিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷খবর লেখা পর্যন্ত বন দপ্তরের কর্মীরা ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন৷
এদিকে সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, কমলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রমেশ যাদব বন দপ্তরের জায়গার সেগুন গাছ কেটে আসবাব পত্র বানানোর জন্য পুলিশের সরকারি গাড়িতে করে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া এগুলিকে কাঠ করার জন্য চেরাই কলে স-মিলে এনেছিলেন৷
অমরপুর ও উদয়পুরে বন দপ্তরের দুটি নাকা চেকিং থাকা সত্ত্বেও এই গাড়িটি কিভাবে ধবজনগরস্থিত চেরাই কলে আসতে পারলো৷
সূত্র মারফত জানা গেছে, জেলা পুলিশ সুপার লাকি চৌহান ও জেলা বন আধিকারিক মহেন্দ্র সিং অবৈধ গাছগুলিকে বৈধ রূপ দেওয়ার চেষ্টায় মাঠ গরম করার চেষ্টা করছেন৷ বন দপ্তরের আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে ক্যারিং লাইসেন্স ছাড়া চোরাই কাঠ বহন করলে সেকশন ৪১/৪১ ট্রানজিট রোল ভায়োলেশন আইন অনুযায়ী ওই ড্রাইভার এর ছয় মাস পর্যন্ত জেল হতে পারে৷ শুধুমাত্র আধিকারিকদের লোভ সংবরণের জন্য এখন বলিরপাঠা হবেন ওই পুলিশ গাড়ির ড্রাইভারই৷
খাবার লেখা পর্যন্ত এই গাড়িটি সিজ করা হয়নি বা এখনো আটক দেখানো হয়নি৷ বনদপ্তর এর পক্ষ থেকে খবর লেখা অব্দি কোন মামলাও করা হয়নি৷ এই ঘটনা চাউর হতেই সাধারণ নাগরিক ও বুদ্ধিজীবী মহলে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে৷ পুলিশ ও বন দপ্তরের আধিকারিকদের ভূমিকায় ছিঃ ছিঃ রব উঠতে শুরু করেছে৷