অনলাইন ডেস্ক, ১৪ ডিসেম্বর।। বাবার হাত ধরে এগিয়ে চলেছে ফুটফুটে এক বাচ্চা। তার এক হাতে ধরা রয়েছে কলা অন্যহাতে বিস্কুট। তবে ওই কলা ও বিস্কুট সে নিজে খাচ্ছে না। ওই বিস্কুট ও কলা সে তুলে দিল প্রতিবাদরত কৃষকদের হাতে। ফুলের মত ফুটফুটে এক বাচ্চাকে নিজেদের মধ্যে পেয়ে কৃষকরাও খুব খুশি প্রতিবাদী কৃষকদের অনেকের সঙ্গেই রয়েছে তাদের ছোট ছেলেমেয়েরা। এদিন তারা নিজেদের মধ্যে নতুন এক শিশুকে পেয়ে তার সঙ্গে খেলায় মেতে ওঠে। চার বছরের ওই ছোট্ট শিশুটির নাম রেহানে। রবিবার সকাল বেলায় বাবার হাত ধরে দিল্লি-গাজীপুর সীমান্তে প্রতিবাদী কৃষকদের কাছে পৌঁছে ছিল রেহানে। রেহানের বাবার নাম মেহতাব আলম। মেহতাব বৈশালীর বাসিন্দা।
রবিবার রেহানে বাবার হাত ধরে প্রথমবার কৃষকদের কাছে আসে। মেহতাব অবশ্য প্রতিদিনই কৃষকদের কাছে আসেন। শুধু আসাই নয়, নিজের পকেটের পয়সা খরচা করে সাধ্যমতো কৃষকদের জন্য কিছু না কিছু খাদ্য সামগ্রী কিনে আনেন। অন্যদিনের মত রবিবার তিনি যখন কৃষকদের কাছে যাবার জন্যে বের হচ্ছিলেন সে সময় তার সঙ্গে যাওয়ার জন্য আবদার করে ছেলে। ছেলের আবদার মেনে ঠান্ডার মধ্যে রেহানেকে নিয়ে বের হন তিনি। মেহতাব বলেছেন, তিনি নিজেও একজন কৃষক পরিবারের সন্তান। তাই কৃষকদের দুঃখ-কষ্ট তিনি বোঝেন। নতুন আইনের জন্য কৃষকরা নিশ্চিতভাবেই অসুবিধায় পড়েছেন। সেকারণেই তাঁরা এই প্রতিবাদ আন্দোলন করছে বলে মেহতাব মনে করেন।
মেহতাব এক বেসরকারি সংস্থার চাকুরে। সংসার চালিয়ে যে পয়সা জমে তা দিয়েই কৃষকদের জন্য প্রতিদিন বিস্কুট ও অন্যান্য খাবার কিনে আনেন তিনি। দিন দশেক ধরে এই কাজ করছেন মেহতাব। এই তরুণ আরও বলেছেন, তার বাবা যদি দেখতেন যে তিনি এভাবে কৃষকদের সাহায্য করছেন তাহলে খুব খুশি হতেন। প্রবল ঠান্ডার মধ্যে হলদে জ্যাকেট জিন্স পরিহিত রেহানেকে পেয়ে খুব খুশি প্রতিবাদী কৃষক ও সেখানে উপস্থিত তাঁদের সন্তানরা। বাচ্চাদের সঙ্গে রেহানে খেলায় মেতে ওঠে। বিদায়ের সময় রেহানে ও অন্য শিশুদের চোখ ছল ছল করে ওঠে। তাই মেহতাব আশ্বাস দিয়েছেন, ছুটির দিন বা সময় পেলেই তিনি ছেলেকে নিয়ে কৃষকদের কাছে আসবেন।