অনলাইন ডেস্ক, ৬ ডিসেম্বর।। চীনে করোনাভাইরাস মহামারী হানা দেওয়ার পর দেশটির অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিবিসির বিশ্লেষক বলছেন, অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে সরকারের নেয়া ঋণ এবং চীনা ধনীদের ব্যয় করা বিপুল পরিমাণ অর্থ। চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সরকারি হিসাব নিয়ে প্রথমদিকে ব্যাপক সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু আক্রান্তের সংখ্যা যাই হোক, চীন দ্রুত এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। ট্র্যাকিং ও ট্রেসিং বা আক্রান্তদের চিহ্নিত করে এবং কারা তাদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে এসেছে সেটা খুঁজে বের করাই চীনের সাফল্যের বড় চাবিকাঠি। আর এর মাধ্যমেই চীনের অর্থনীতির দ্রুত পুনরুজ্জীবন ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনেক পর্যবেক্ষক আবার বলছেন, অর্থনীতি সবক্ষেত্রে সমানভাবে সচল হয়নি। পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল পেট্টিস বলেছেন, ‘চীনের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন অনেকটা একপেশে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রায় পুরোটাই সরবরাহের ক্ষেত্রে- উৎপাদনের ক্ষেত্রে। কিন্তু অর্থনীতির চাহিদার দিকে সেভাবে উন্নতি দেখা যায়নি। ’তিনি বলছেন, চীন সরকার অবকাঠামো বা শিল্প উৎপাদন চালু রাখতে প্রথমেই ঋণের অর্থ জুগিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর যে কৌশল নিয়েছে সেটাই এই ভারসাম্যহীনতার একটা কারণ। অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যাপক পেট্টিস মনে করছেন এর ফলে উৎপাদন হচ্ছে প্রচুর, কিন্তু বাজারে কেনার মতো ক্রেতা তুলনামূলকভাবে কম।
যারা অর্থ ব্যয় করতে শুরু করেছেন তারা কিনছেন নতুন গাড়ি বা তারা বিমান ভ্রমণের দিকে ঝুঁকছেন। তবে এটা খুবই স্পষ্ট যে ভাইরাস মহামারীর আগে চীনে যে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পরিবেশ ছিল, সেটা মানুষ আবার অনেকাংশে ফিরে পেয়েছে। অর্থনীতি এতটাই স্থিতিশীল হয়েছে বলে সরকার মনে করছে যে তারা তাদের পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। এই পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আর্থসামাজিক কৌশলের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ২০২০ সালে চীনই হতে যাচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র বড় অর্থনীতির দেশ যাদের অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে দেখা যাবে।