দূর নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয় ইরানের পরমাণুবিজ্ঞানীকে

অনলাইন ডেস্ক, ১ ডিসেম্বর।। ইরানের পরমাণুবিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিযাদেহকে হত্যার জন্য দূর নিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, ঘটনাস্থলে আক্রমণকারীদের কেউ উপস্থিত ছিল না। এ তথ্য দিলেন দেশটির সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সচিব আলী শামখানি। খবর বিবিসি। তিনি বলেন, ফখরিযাদেহর ওপর ঠিক কোন জায়গায় আক্রমণ চালানো হবে তাও তারা জানতেন, কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডে ঘাতকেরা একেবারে নতুন, পেশাদার এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, তাই তা ঠেকানো যায়নি।

এ পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানলেও তারা তা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়। ইরান এর আগে বলেছিল, তেহরানের কাছে আবসার্ড শহরে একদল আক্রমণকারী ফখরিযাদেহর গাড়ির ওপর গুলিবর্ষণ করে এবং এরপর দেহরক্ষীদের সঙ্গে তাদের গুলি বিনিময় হয়। কিন্তু এখন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী সংশ্লিষ্ট ফার্স নিউজ এজেন্সি বলছে, ফখরিযাদেহকে একটি দূরনিয়ন্ত্রিত মেশিনগান দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আলী শামখানি বলেন, “ফখরিযাদেহর নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছিল, কিন্তু শত্রুপক্ষ একেবারেই নতুন, পেশাদার এবং বিশেষ ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করেছে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা সফল হয়েছে।

”তিনি জানান, হামলাকারীদের পরিচিতি সম্পর্কে কিছু সূত্র পাওয়া গেছে। নির্বাসিত ইরানি দল মুজাহিদীন ই খাল্ক-এর সদস্যরা ‘নিশ্চিতভাবে’ জড়িত বলে ইঙ্গিত করেছেন। ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সংশ্লিষ্টতার কথাও তিনি বলেছেন। সোমবার তেহরানে মোহসেন ফখরিযাদেহর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের জাতীয় পতাকায় মোড়া মৃতদেহ বহন করে সৈন্যরা। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আমির হাতামি এক বক্তৃতায় বলেন, এই হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া হবে। মঙ্গলবার তেহরানে রাষ্ট্রীয়ভাবে ফখরিযাদেহর জানাজা হয়। শুক্রবার তেহরানের কাছে দামাভান্দ কাউন্টির আবসার্ড এলাকায় হামলার শিকার হন ফখরিযাদেহ। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে মারা যান। এ ঘটনার হত্যার জন্য ইসরায়েলসহ আন্তর্জাতিক শক্তিকে দায়ী করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে তিনি বলেন, “আবারও একবার দখলদার ইহুদিদের ভাড়াটে খুনিদের রক্তাক্ত হাতের সঙ্গে শয়তানি হাত মেলালো বৈশ্বিক ঔদ্ধত্য শক্তিগুলো।

” ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সামরিক উপদেষ্টা হোসেইন দেঘান বলেন, “এই হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের ওপর বজ্রের মতো আঘাত হানা হবে। ”তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইসরায়েল। ফখরিযাদেহ ছিলেন সর্বাধিক খ্যাতিমান ইরানি পরমাণুবিজ্ঞানী এবং অভিজাত ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোরের সিনিয়র অফিসার। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকরা তাকে ‘ইরানি বোমার জনক’ হিসেবে অভিহিত করতেন। ২০১৮ সালে ইসরায়েলের থেকে পাওয়া গোপন নথি অনুসারে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির একটি কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?