অহিংসার বাণী রাজ্যের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২ অক্টোবর।। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ ও অহিংসার বাণী রাজ্যের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ সমগ্র বিশ্বকে আলাে দেখিয়েছে। তাঁর জীবনের মূলমন্ত্র ছিলাে অহিংসা, সত্যাগ্রহ ও গ্রাম স্বরাজ। তিনি এক নতুন ভারত গড়তে চেয়েছিলেন। তাই তাঁর মত, পথ ও আদর্শকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে মহাত্মা গান্ধীর জন্মসার্ধশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়ােজিত দু’বছরব্যাপী রাজ্যভিত্তিক সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এ-কথা বলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর থেকে রাজ্যে মহাত্মা গান্ধীর জন্মসার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে দুই বছরব্যাপী যে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিলাে আজ তার সমাপ্তি হলাে। প্রদীপ জ্বেলে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, সমগ্র বিশ্বে ভারতকে যারা চেনেন ও জানেন তারা মহাত্মা গান্ধীকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখনও মহাত্মা গান্ধীর নাম শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহাত্মা গান্ধী ছিলেন সত্যের পূজারী। তিনি নারী-পুরুষের সমান অধিকার চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন গ্রাম স্বরাজ, ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নয়ন ও মহিলা ক্ষমতায়ন।

চেয়েছিলেন স্বচ্ছ ভারত গড়ে তুলতে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মহাত্মা গান্ধীর মত ও আদর্শ অনুসরণ করেই এগিয়ে চলেছেন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি ক্ষমতায় এসে স্বচ্ছ ভারত নির্মাণ প্রকল্প চালু করেন। এই প্রকল্পে আজ দেশের বিভিন্ন গ্রামে, শহরে, স্কুলে, কলেজে বিজ্ঞানসম্মত শৌচালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। আজ বিদ্যালয়গুলিতে আগের তুলনায় ছাত্রীদের উপস্থিতির হার বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছেন। দেশের বুনিয়াদি শিক্ষাকে শক্তিশালী করার উপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই দিশাকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী দেশে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মনে করেন রাজনীতি করার জন্য সরকার নয়।

সরকার হচ্ছে দেশ গড়ার জন্য। দেশ নির্মাণের জন্য। প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যকে অলক্ষ্মী আখ্যায়িত করেছেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিকাশে কেন্দ্রীয় সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছেন তা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে।অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পথ ধরেই রাজ্য এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী সাব্রুমের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন, লজিস্টিক হাব নির্মাণ, সাব্রুমের সুসংহত স্থলবন্দর নির্মাণ ইত্যাদির বিষয়ে গুরুত্বারােপ করেছেন। সাব্রুমের ফেনী নদীর উপর ভারত-বাংলা মৈত্রী সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে চিটাগাং বন্দরের সাথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির যােগাযােগ গড়ে উঠবে। এরফলে ত্রিপুরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির করিডাের হয়ে উঠবে।

তিনি বলেন, সরকার নতুন করে আরও ৩০,০০০ জনকে ভাতা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। রাজ্যের ১ লক্ষের উপর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন যােজনায় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের শিল্পীগণ। বর্তমান করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর ও বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়ােজন করে। মহাত্মা গান্ধীর জন্মসার্ধশতবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা বিজয়ী ১০ জন ছাত্র ছাত্রী, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত ভজন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৮ জন ছাত্র ছাত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ভার্চুয়াল বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৬ জনকে এবং মহাবিদ্যালয় স্তরে ভার্চুয়াল বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ১০ জন ছাত্র ছাত্রী পুরস্কৃত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব অনলাইন কুইজে প্রথম স্থানাধিকারী বর্ণালী দেবনাথের হাতে পুরস্কার ও শংসাপত্র তুলে দেন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?