স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৮ সেপ্টেম্বর।।কৃষি বিলের বিরুদ্ধাচরণ করে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের রাজভবন ঘেরাও অভিযানে পরিস্থিতি এতটাই অগ্ণিগর্ভ হয়ে উঠেছিল যে পুলিশকে জলকামান ছুঁড়তে হয়েছে৷ ব্যারিকেড ভেঙে প্রদেশ কংগ্রেস এবং যুব কংগ্রেস কর্মীদের আটকাতে গিয়ে পুলিশের হিমশিম খেতে হয়েছে৷ তবে দীর্ঘ সময় প্রতিরোধ গড়ে তুলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ৷
শেষে প্রদেশ কংগ্রেসের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল রাজভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে লেখা এক স্মারকলিপি রাজ্যপালের হাতে তুলে দিয়েছেন৷ তাৎপর্যের বিষয়, দীর্ঘদিন পর প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মণ কোনও আন্দোলনে পা মিলিয়েছেন৷ রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দিতে রাজভবনেও গেছেন তিনি৷
আজ সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আইনজীবী পীযূষকান্তি বিশ্বাস বলেন, কৃষকদের অধিকার খর্ব করার লক্ষ্যেই তিনটি বিল পাশ হয়েছে৷ তাতে রাষ্ট্রপতিও অনুমোদন দিয়েছেন৷ তাঁর দাবি, ওই বিল কৃষকদের সর্বনাশ করবে৷ তাঁর কথায়, কয়েক হাজার কৃষক ইতিমধ্যে আত্মহত্যা করেছেন৷ ওই বিল আরও কৃষককে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেবে৷
তাঁর দাবি, কংগ্রেস কৃষকদের পাশে রয়েছে৷ ৬২ কোটির অধিক মানুষ এবং আড়াই শতাধিক সংগঠন ইতিমধ্যে ওই বিলের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছে৷ এই আন্দোলন কেন্দ্রে সরকার পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে৷
এদিন সার্কিট হাউসে প্রদেশ কংগ্রেস এবং যুব কংগ্রেস কর্মীদের ব্যারিকেড দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ৷ তাদের মোকাবিলায় সেখানে পুলিশ, টিএসআর এবং কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল৷ কিন্তু পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কংগ্রেস কর্মীরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান ছুঁড়তে থাকে৷ দীর্ঘক্ষণ কংগ্রেস কর্মীরা নিরাপত্তা বাহিনীকে ঠেলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন৷
পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের পিছু হটতে বাধ্য করেছে৷ শেষে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল প্রদেশ সভাপতি পীযূষকান্তি বিশ্বাসের নেতৃত্বে রাজভবনে রাজ্যপালের সাথে দেখা করতে যান৷ওই প্রতিনিধি দলে পীযূষকান্তি বিশ্বাস ছাড়াও ছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মণ, রাজেশ্বর দেববর্মা প্রমুখ৷ এই আইন বাতিলের দাবিতে রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে লেখা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কংগ্রেস৷ এদিকে সদর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শাশ্বত কুমার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণাধীন৷ বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷
এদিকে, কৃষি বিলের বিরোধিতায় রাজভবন ঘেরাও অভিযানে কংগ্রেসের একটি মিছিলকে পুলিশ মাঝপথেই আটকে দিয়েছিল৷ অ্যাডভাইজার চৌমুহনি থেকে শুরু হয়ে মিছিলটিকে কর্নেল চৌমুহনিতে আটকে দেয় পুলিশ৷ পুলিশের বাধা দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন৷