স্টাফ রিপোর্টার, আমবাসা, ৯ সেপ্টেম্বর।। আগামী দুইদিনের মধ্যে আমবাসা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিকে ডেডিকেটেড কোভিড হেলথ সেন্টারে রূপান্তরিত করা হবে৷ এখানে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পন্ন ১৫টি শয্যা থাকবে৷ আজ ধলাই জেলার জেলাশাসকের কনফারেন্স হলে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অনুষ্ঠিত এক পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এই কথা বলেন৷ তিনি বলেন, এই কোভিড কেয়ার সেন্টারে রেখেই রোগীদের সুুস্থ করে বাড়ি পাঠাতে হবে৷ শুধুমাত্র সংকটজনক রোগীদেরই আগরতলা জিবি হাসপাতালে রেফার করতে হবে৷<br>
আগরতলার জিবি হাসপাতালে সংকটজনক রোগীদের যে আপতকালীন ইনজেকশান দেওয়া হচ্ছে তা ধলাই জেলার স্থানীয় কোভিড কেয়ার সেন্টারে দেওয়া যায় কি না তা খতিয়ে দেখতে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ব্যবস্থাটি করা গেলে এতে রোগীর মৃত্যুর হার যেমন কমবে তেমনি জিবি হাসপাতালের উপর চাপও কমবে৷ কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্যে যে সমস্ত কল সেন্টার খোলা হয়েছে সেগুলিকে দিনরাত খোলা রাখার উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেছেন৷ দিনে অন্তত দুইবার চিকিৎসকদের কোভিড কেয়ার সেন্টারে রোগীদের পর্যবেক্ষণ করার নির্দেশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই সেন্টারগুলিতে মাইক্রোফোনের ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ রোগীরা যদি অসুুস্থ বোধ করেন তাহলে এই মাইক্রোফোন তারা ব্যবহার করতে পারবেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রোগীরা যাতে মানসিকভাবে দুর্বল না হয়ে পড়েন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ যে সমস্ত রোগী হোম আইসোলেশনে রয়েছেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের তাদের ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ খবর নিতে হবে৷ বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ধলাই জেলার জেলাশাসক গোবেকর ময়ূর রতিলালকে এম জি এন রেগার কাজকর্ম চালু রাখার নির্দেশ দিয়ে বলেন, পূজার আগে গ্রামে গে’ যাতে রেগার শ্রমিকরা তাদের মজরী পেয়ে যান তা সুুনিশ্চিত করতে হবে৷<br>
সভায় খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা স্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পসারণে কমলপুর মহকুমা হাসপাতালে আরও বিশেষ’ চিকিৎসক দেওয়ার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন৷ সভায় ধলাই জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. চিতন দেববর্মা জেলার করোনা রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে যে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা বিস্তারিত তুলে ধরেন৷ তিনি জানান, এই মূহুর্তে জেলায় তিনটি কোভিড কেয়ার সেন্টার রয়েছে৷ জেলায় হোম আইসোলেশনে যে ৩৬৪জন রয়েছেন তাদের মধ্যে ৯৩ জন ১,৫০০ টাকা করে আর্থিক অনুদান পাওয়ার জন্য বিবেচিত হয়েছেন৷ এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ৭৩ জনকে এই আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে৷ সভায় ধলাই জিলা পরিষদের সভাধিপতি রুবি ঘোষ (গোপ), মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ সচিব প্রশান্ত কুমার গোয়েল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শুভাশীষ দেববর্মা প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন৷ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলার পুলিশ সুুপার কিশোর দেববর্মা, অতিরিক্ত জেলাশাসক অজিত শুক্ল দাস, স’য় চক্রবর্তী এবং জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন মহকুমার মহকুমা শাসকগণ৷<br>
পর্যালোচনা সভা শেষে মুখ্যমন্ত্রী আমবাসাস্থিত পঞ্চায়েত রাজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও আমবাসাবাড়ি এস টি বয়েজ হোস্টেল কোভিড কেয়ার সেন্টার পরিদর্শন করেন৷ সেখানকার আবাসিকদের চিকিৎসা পরিষেবা এবং তাদের থাকা খাওয়া সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়েছেন৷ কথা বলেছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে৷ প’ায়েত রাজ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কোভিড কেয়ার সেন্টার পরিদর্শনকালে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব সাংবাদিকদের বলেন, সমস্ত রোগীদের যাতে জিবি হাসপাতালে ছুটে যেতে না হয় রাজ্য সরকার তার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে৷ তাই জেলার কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলিতে যথাযথ চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে৷ কোভিড কেয়ার সেন্টারগুলি পরিদর্শনের সময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব, ধলাই জিলা পরিষদের সভাধিপতি, জেলাশাসক, পুলিশ সুুপার, মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ সচিব, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷