স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৮ জুলাই।। চিকিৎসককে লক্ষ্য করে থুতু দেওয়ার ঘটনায় প্রশাসনের তরফে করোনা আক্রান্তের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আগরতলায় সদ্যজাত শিশু সহ করোনা আক্রান্ত পাঁচ জন্মদাত্রী এবং এক গর্ভবতী মহিলাকে কোভিড কেয়ার সেন্টারে ভরতি করতে গিয়ে অন্য রোগীদের হাতেই লাঞ্চিত হয়েছিলেন ডা. সংগীতা চক্রবর্তী। ওই ঘটনায়, স্বাস্থ্য অধিকর্তা নিউ ক্যাপিটাল কমপ্লেক্স থানায় করোনা আক্রান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। করোনা অতিমারীর পরিস্থিতি-তে সরকারি কর্মচারী এবং স্বাস্থ্য কর্মী-দের উপর হামলা হুজ্জুতি বরদাস্ত করা হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপার মানিক দাস।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার শিশু সহ করোনা আক্রান্ত পাঁচ জন্মদাত্রী এবং এক গর্ভবতী মহিলাকে ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ভগৎ সিং কোভিড কেয়ার সেন্টারে ভরতির জন্য নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, সেখানে ভরতি অন্য করোনা আক্রান্তরা তাতে আপত্তি জানান। খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন পশ্চিম জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. সংগীত চক্রবর্তী। কিন্তু, রোগী-রা তাঁকেই অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল দেন। এ-বিষয়ে ডা. সংগীতা জানিয়েছিলেন, সদ্যজাত সন্তান নিয়ে জন্মদাত্রীরা এবং পিপিই কিট পরে স্বাস্থ্য কর্মীরা ৫ ঘণ্টা ধরে বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু তাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। এমনকি, তাঁকে লক্ষ্য কর থুতু ফেলা হয়েছে এবং এক যুবক উপর থেকে জল ফেলেছে। তিনি বলেন, অবশেষে কোনও উপায় না পেয়ে ওই করোনা আক্রান্তদের জিবি-র কোভিড হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
তিনি জানান, সেদিনের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসকের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। কর্তব্যরত অবস্থায় লাঞ্চনার শিকার হয়েছি, সে- বিষয়ে রিপোর্টে জানিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসক জেলা পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনাও করেছেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. শুভাশীষ দেববর্মা বলেন, গতকাল নিউ ক্যাপিটাল কমপ্লেক্স থানায় ওই ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপার মানিক দাস জানিয়েছেন, করোনা অতিমারীর-র আইন সকলকে মেনে চলতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারী এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের উপর হামলা হুজ্জুতি কোনভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য কর্মী-র উপর থুতু দেওয়ার ঘটনায় সারা ত্রিপুরায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। নেটিজেন-রা সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। ত্রিপুরা সরকারও ওই ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রী রতন নাথ বলেন, এ-ধরনের ঘটনা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায়না। ত্রিপুরা সরকার ওই ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নেবে।