নতুন প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ জুন৷৷ ত্রিপুরায় ১০৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের খুঁজে বের করার জন্য রাজ্য সরকার কমিশন গঠন করেছে৷ ত্রিপুরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে সিপিএম৷ কমিশন গঠনে সিপিএম ভীষণ ভয় পেয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ বুধবার সিপিএম এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময় শিক্ষা দফতরে ১০,৩২৩ জন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজকে নিয়ে রাজ্যের বিজেপি-আইপিএফটি জোট মন্ত্রিসভা তদন্ত কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ প্রহসনাত্মক৷ এ বিষয়ে সিপিএমের যুক্তি, ত্রিপুরায় গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি তাদের ‘তথাকথিত ভিজন ডকুমেন্ট’-এ হাইকোর্ট-সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ জন শিক্ষক পুনর্নিযুক্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল৷ কিন্তু ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গত ২৬ মাসে এই অসহায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের পুনর্নিয়োগের বিন্দুমাত্র উদ্যোগ নেয়নি বিজেপি জোট সরকার৷ সিপিএম বিদ্রুপ করে বলেছে, চাকরিচ্যুতি শিক্ষকরা প্রতিশ্রুতি খেলাপের বিরুদ্ধে লকডাউনের মধ্যেও আন্দোলনে নেমেছেন৷ তাই বর্তমান মন্ত্রিসভা তাদের পিঠ বাঁচাতে, জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টায় তদন্ত কমিশন গঠনের প্রহসনাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ দল দাবি করেছে, ত্রিপুরার বিবেকবান মানুষ চান চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের অবিলম্বে পুনর্নিযুক্তি দেওয়া হোক৷ সিপিএম তাদের বিবৃতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে বলেছে, কংগ্রেস দলের নেতৃত্ব যাঁরা বিধানসভা নির্বাচনের আগে জামা পাল্টে বিজেপি হয়েছেন এবং রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির জন্য হাইকোর্টে মামলা করিয়েছিলেন৷ হাইকোর্ট ১৯৭৮ সাল থেকে বামফ্রন্ট সরকার অনুসৃত নিয়োগ নীতি বিতর্কিত বলে রায় দিয়ে চাকরি বাতিল করার পর পূর্বর্তন বামফ্রন্ট সরকার চাকরিচ্যুত শিক্ষক সহ অন্যান্য বেকারদের অন্য পদে নিয়োগের জন্য নতুন পদ সৃষ্টি করে তা পূরণের উদ্যোগ নিয়েছিল৷ কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব তা ভেস্তে দিতে তাদের কর্মী ও আইনজীবীদের দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে স্থগিতাদেশ আদায় করেছিল৷ পরবর্তী সময় সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ তুলে নেয়৷ কিন্তু বিজেপি চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের নিয়ে নির্বাচনের আগে থেকে নানা খেলা শুরু করে৷ সিপিএমের দাবি, চাকরিতে পুনর্বহালের প্রলোভন দেখিয়ে বিভ্রান্ত করে নির্বাচনে তাঁদের একাংশের সমর্থন আদায় করেছিল বিজেপি৷ এখন প্রতিশ্রুতি খেলাপ করে তাঁদের সাথে চরম প্রতারণা করছে দল৷ সিপিএমের বক্তব্য, ওই মামলায় হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্ট রায় দিয়েছে৷ এখন সে বিষয়ে একজন অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজকে নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে৷ বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার এভাবে তাদের পিঠ বাঁচাতে পারবে না, কটাক্ষের সুরে বলেছে সিপিএম৷ কিন্তু, সিপিএম ওই বিবৃতিতে ভুল নিয়োগ নীতিতে চাকরি কেন দেওয়া হয়েছিল, এমন বহু প্রশ্ণের খণ্ডন করেনি৷ তাই মনে করা হচ্ছে, তদন্ত কমিশন গঠনে সিপিএম ভয় পেয়েছে৷