নতুন প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ মে।। ত্রিপুরায় দুই সাধারণ নাগরিকের করোনা-আক্রান্তের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে তাঁরা সংক্রমিত হলেন। এ-বিষয়ে অনুসন্ধানে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে দক্ষিণ অসমের বদরপুরবাসী এবং ওই রাজ্য প্রশাসনের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। মধ্য অসমের তেজপুরে একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতরা বাসে ত্রিপুরায় আসেন। গুয়াহাটিতে ত্রিপুরার এক যুবতী ওই বাসে ওঠেন। অন্যান্য যাত্রীদের আপত্তি সত্ত্বেও পথে আরও ছয় জনকে গাড়ির চালক বাসে তুলেন। তারা সকলেই অসমের বদরপুর নেমে গেছেন। তাদের মধ্যে একজন ত্রিপুরায় করোনা-আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত যুবকের সাথে বসেছিলেন।
এ-বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন ওই সংস্থায় কর্মরত সোনামুড়া মহকুমার তুইসাখান্দালের বাসিন্দা ধনঞ্জয় নোয়াতিয়া। তাঁর আশঙ্কা, বদরপুরের ওই যাত্রীর শরীর থেকেই ত্রিপুরার যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্ত, উত্তর মহারানিপুরের ওই যুবতী কীভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তা বুঝতে পারছেন না তিনি।
তাঁর কথায়, গত ১৩ মে তেজপুর থেকে আমরা রওয়ানা হয়েছিলাম। গুয়াহাটিতে ওই যুবতী আমাদের বাসে উঠেছিলেন। কারণ, তার পরিচিত আমাদের সাথেই কর্মরত ছিলেন। তিনি বলেন, পথে গাড়ির চালক ছয় জনকে বাসে তুলে নেন। তাঁর দাবি, আমরা আপত্তি করেছিলাম। কারণ, ছয়জনকে গাড়িতে তোলা হলে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব ছিল না। কিন্তু চালক আমাদের কোনও কথা শুনেননি। অগত্যা বাধ্য হয়ে তাঁদের সাথেই আমাদের বাসে সফর করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ওই ছয়জনের মধ্যে এক ব্যক্তি কমলপুরের ওই যুবকের সাথে বসেছিলেন| তাঁরা বদরপুর নেমে গেছেন।
ধনঞ্জয় বলেন, ১৪ মে দুপুর ১২টা আমরা চোরাইবাড়িতে পৌঁছি। এর পর ওই বাস আমাদের সেখানে রেখে ফিরে গেছে। তাঁর কথায়, চোরাইবাড়িতে আমাদের সোয়াব সংগ্রহ করা হয়। তার পর আমরা আলাদা হয়ে যাই। তিনি জানান, আমরা ওই বাসে ২৩ জন এসেছিলাম। কিন্তু চোরাইবাড়ি থেকে বাড়ি পৌঁছার জন্য আমরা আলাদাভাবে রওয়ানা দিয়েছিলাম। তাঁর দাবি, উত্তর মহারানিপুরের ওই যুবতী সহ ছয়জন গাড়ি নিয়ে দিনেরবেলায় বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন। আমরা রাতে রওয়ানা দিয়েছি।
তাঁর দাবি, অসমে থাকাকালীন আমরা সকলে সুস্থই ছিলাম। আমাদের মধ্যে করোনা-র কোনও লক্ষণ ছিল না। কিন্তু ত্রিপুরায় নমুনা পরীক্ষায় আমাদের মধ্যে এক যুবক ও গুয়াহাটি থেকে আগত ওই যুবতীর কোভিড-১৯ রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বদরপুর নেমে যাওয়া ওই ছয়জনের মধ্যে এক ব্যক্তি বাসে কমলপুরের ওই যুবকের পাশের আসনে বসেছিলেন। তাই ওই ব্যক্তির থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে তিনি মনে করছেন। তবে ওই যুবতী কীভাবে সংক্রমিত হলেন, সে-বিষয়টি তাঁকে ভাবাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে এ-ক্ষেত্রেও সংক্রমণের উৎস খোঁজে বের করা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।