নতুন প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ মার্চ ৷৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশবাসী তথা রাজ্যবাসী দারুণ সচেতনতার পরিচয় দিলেন৷ প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের জনগণ রবিবার সকাল থেকে স্বতপ্রণোদিতভাবে জনতা কার্ফু পালন করেছেন৷ এটি খুবই ইতিবাচক দিক৷ প্রকৃতপক্ষে প্রত্যেক নাগরিক হোম কোরিয়ান টাইমে কাটিয়েছেন দিনটি৷ ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিহত করতে দেশবাসী ঐক্যের বার্তাই দিলেন৷ কোন রাজনৈতিক দলের ডাক বন্ধ, কিংবা প্রশাসন আয়োজিত কার্ফু নয়, জনগণ পালন করেছেন জনতা কার্ফু৷ প্রত্যেকেই হোম কোরিয়ান টাইমে অবস্থান করে দেশকে ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন৷ এই ভয়ঙ্কর রোগ প্রতিহত করতে আমরা সবাই যে এক ও অভিন্ন তার প্রমাণ মিলেছে এই বন্ধের মধ্য দিয়ে৷ জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হননি৷ আরক্ষা প্রশাসন বিষয়টির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে চলেছিল৷ তারাও স্বীকার করেছেন রাজ্যবাসী স্বতপ্রণোদিতভাবে জনতা কার্ফু শামিল হয়েছেন৷ রাস্তায় লক্ষ্য করা গেছে সংবাদ মাধ্যমের লোকজন, বিদ্যুৎ কর্মী, দমকল বাহিনীর কর্মী, অ্যাম্বুলেন্স এবং পুলিশ কর্মীদের৷ এছাড়া জরুরি পরিষেবার তাগিদে বিশেষ করে চিকিৎসার জন্য সামান্য কিছু সংখ্যক লোকজনকে রাস্তায় বের হতে দেখা গেছে৷ চন্দ্রপুর আইএসবিটিতে কর্তব্যরত এক পুলিশ অফিসার জানালেন তার বাস্তব অভিজ্ঞতা৷ রাজ্যের অন্যতম প্রধান বাজার মহারাজগঞ্জ বাজার সহ রাজ্যের সবকটি বাজারহাট ছিল বন্ধ, শুনশান৷ শনিবার রাতে মহারাজগঞ্জ বাজারে বাৎসরিক কালী পূজা ছিল৷ তারাও তেমন কোন আনন্দ উল্লাসে শামিল হননি৷ রবিবার কালী পুজার প্যান্ডেলে বাজার ব্যবসায়ী জানান, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা বাজার হাট বন্ধ রেখেছেন৷ গতকাল রাতে কালী পূজা হলেও সকাল থেকে তারা জনতা কার্ফুতেই শামিল হয়েছেন৷ দশমী উপলক্ষ্যেও কোন আনন্দ উল্লাসে তারা মও হবেন না৷ তারা এই সঙ্কটময় মুহূর্তে নিজেদের জীবন রক্ষাতেই বেশি দায়িত্বশীল বলে জানান৷ পূর্ব নির্ধারিত বিমানে কলকাতা থেকে অনেকেই রবিবার জনতার কার্ফুর মধ্যেই আগরতলায় এসে পৌঁছেছেন৷ বিমানবন্দর থেকে পুলিশের গাড়ি করে তাদেরকে পশ্চিম থানার সামনে নিয়ে আসা হয়৷ দুরদুরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা আগরতলায় এসে পৌঁছলেও যানবাহন চলাচল না করায় দুরদুরান্তে তাদের বাড়িঘরে পৌঁছতে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হন৷ সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ থাকায় অনেকেই রেলে যাতায়াতের চেষ্টা করেছেন৷ কিন্তু রেল চলাচলও বন্ধ রয়েছে৷ সে কারণে রেলে যাতায়াতও অসম্ভব হয়ে পড়ে৷ যাত্রীদের মারাত্মক দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে৷ অনেকেই বহির্রাজ্যে কাজ করছেন৷ করোনা ভাইরাস আতঙ্কে তারাও কাজ ছেড়ে বাড়িঘরে ফিরতে উদগ্রীব৷ পুনেতে কাজ করত দুই যুবক৷ তারা বিমানে আগরতলায় এসে পৌঁছেছে৷ তারা সুস্থ৷ রেল চলাচল না করায় আগরতলা রেলস্টেশনে তাদেরকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়৷ রেল চলাচল না করায় তারা আগরতলা রেলস্টেশনে অবস্থান করছে৷ সোমবার সকালে রেল চললে তারা বাড়িতে ফিরবে বলে জানায়৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে জনতা কার্ফু আমাদের রাজ্যে পুরোপুরি সফল হয়েছে৷ কোথাও থেকে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ নেই৷