নতুন প্রতিনিধি, অমরপুর, ১১ জানুয়ারি।। সামাজিক অবক্ষয় কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে। সমাজ গড়ার কারিগর শিক্ষক। তারাই নাকি দেশ গড়ার আগামি প্রজন্মকে তৈরি করে। কিন্তু সেই শিক্ষকের মায়ের করুন চিত্র হার মানিয়েছে শিল্পী নচিকেতার বৃদ্ধাশ্রমের অফিসার ছেলেকেও। তাই হয়তো সময় এসেছে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করার কোন শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছি আমরা। কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে এই সমাজ। অমরপুর মহকুমার চণ্ডীপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রমোদ দেবনাথ। পেশায় তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। ওনার মা শিশু বালা দেবনাথ। বয়স আনুমানিক ৯০ বছর। বয়ভারে বৃদ্ধ শিশু বালা দেবনাথ ঠিক ভাবে হাঁটতেও পারেন না। বৃদ্ধ বলে কথা নানান রোগে আক্রান্ত। কিন্তু যে ছেলেকে শিক্ষায় দিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন আজ সেই ছেলে আর ছেলের বৌ-এর হাতে প্রতিনিয়ত তিনি লাঞ্চিত। দিনের পর দিন অবহেলা জুটছে ওনার কপালে। কখন পিছনের দিকে হাত বেধে চলে মারধর। পিছনের দিকে দুইটি হাত বেধে রাখা হয়েছে। তাই নিজের বিছানায় কপাল ঠেকিয়ে অঝোরে কান্না করে যাচ্ছেন।বৃদ্ধ বলে কথা শীত কাতুরে, তাই একটু কম্বলের নিচে ঘুমাতে ভালবাসেন শিশু বালা দেবনাথ। এটাই ওনার অপরাধ। গুণধর ছেলের বৌ রাত তিনটায় বিছানায় জল ঢেলে দেন। যেন তিনি ঘুমাতে না পড়েন। শুধু তাই নয় দিনের বেলায় ঘুমাতে চাইলেন বলে বসিয়ে রাখা হল ঘরের বারান্দায়। হাতে লাঠি নিয়ে দারোয়ানের ভুমিকায় সেই গুণধর ছেলের বৌ। এই বৃদ্ধ বয়সে সকালে ঘুম থেকে উঠে ছেলের বৌকে রান্নার কাজে সহযোগিতা করেন। সবজী কেটে দেন। তারপরও ওনার কপালে প্রতিনিয়ত জুটছে এই অমানবিক নির্যাতন। কেউই নেই প্রতিবাদ করার। কারন ছেলেও ছেলের বৌ-এর পক্ষে অবস্থান করছেন। তাই মুখ বুঝে সবকিছু নিরব সহ্য করছেন শিশু বালা দেবনাথ। মায়ের এই কষ্ট ছেলের কাছে কিছুই নয়। তাইতো তিনি এক বাক্যে জানিয়ে দিলেন ওনার মাকে কোন ধরনের মারধর করা হয় না। মানুষ মিথ্যা অভিযোগ করছে।গুণধর ছেলে যতই সত্য অস্বীকার করুন না কেন প্রতিবেশিরাও ঘটনা সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। প্রতিবেসিরা সংবাদ প্রতিনিধিদের জনানা বৃদ্ধ শিশু বালা দেবনাথের উপর চলা অকথ্য নির্যাতনের কথা।অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছেলের মায়ের উপর এই ধরনের নির্যাতনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ছি ছি রব পরে গেছে এলাকাজুড়ে। দাবি উঠেছে এই গুণধর শিক্ষক ছেলে ও ছেলের বৌ-র কঠোর শাস্তির। এখন দেখার প্রশাসন কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।