নতুন প্রতিনিধি, আগরতলা, ২১ ডিসেম্বর৷৷ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) প্রত্যাহার এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)-র বিরোধিতা করে শনিবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় সুবিশাল মিছিল সংগঠিত করেছে ‘আমরা বাঙালি’৷ দলের রাজ্য কমিটির সচিব হরিগোপাল দেবনাথের কথায়, যুগেযুগে বাঙালি অত্যাচারের শিকার হয়েছেন৷ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি বাঙালির আরও বিপদ ডেকে আনবে৷ তাই এর বিরুদ্ধে সকলের একজোট হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে৷ তাঁর বক্তব্য, জাতির দুর্দিনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধে শামিল হওয়া উচিত৷ তিনি সংবিধানের তিন নম্বর ধারা অনুযায়ী ‘বাঙালিস্তান’ গঠনের দাবি তুলেছেন৷ হরিগোপাল বলেন, ভারতের বুকে বাঙালি জাতিসত্ত্বা আজ এক চরম বিপদের সম্মুখীন৷ তাঁর কথায়, দেশভাগের বলি হয়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে এ-দেশে আসলে তাঁদের সসম্মানে পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু উদ্বাস্তু পঞ্জাবিদের ক্ষেত্রে সেই প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হলেও বাঙালিদের ক্ষেত্রে ছিঁটেফেঁটাও কার্যকরী হয়নি৷ তাঁর অভিযোগ, বাঙালি জাতির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা শুধু অতীতে নয়, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ও হয়েছে৷ তাঁর দাবি, স্বাধীনতার সময় প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলার কেটে নেওয়া যে অঞ্চলগুলি বিহার, ওড়িশা এবং অসম প্রদেশের মতো রাজ্যে রয়েছে সেগুলি একত্রে জুড়ে বৃহত্তর ‘বঙ্গপ্রদেশ’ গঠন করার কথা ছিল৷ কিন্তু বাংলার দাবি উপেক্ষিতই থেকে গেছে৷ এদিন তিনি অভিযোগ তুলে বলেন, ত্রিপুরা-সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে বাঙালিকে সমূলে ধবংস করে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই উগ্রপন্থী সৃষ্টি হয়েছিল৷ এখন বাঙালিদের বিরুদ্ধে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন আনা হয়েছে৷ তিনি বলেন, বৈধ ভোটারকার্ড, আধারকার্ড, এমন-কি নাগরিক কার্ড থাকা সত্ত্বেও অসমে লক্ষ লক্ষ বাঙালি এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন৷ ডিটেনশন ক্যাম্পে তাঁদের জীবন নরকে পরিণত হয়েছে৷ তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, এনআরসি সম্পূর্ণ মানবতাবিরোধী এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ধর্মনিরপেক্ষতার মূল ভিত্তিতে আঘাত করেছে৷ হরিগোপাল দেবনাথ বলেন, বাঙালি সত্ত্বাকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের একজোট হতে হবে৷ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, তাই এখন রুখে দাঁড়াতে হবে৷ তিনি বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলে বাঙালির অধিকার রক্ষায় সংবিধানের তিন নম্বর ধারা মোতাবেক বাঙালিস্তান গড়ার ডাক দিয়েছেন৷ পাশাপাশি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি৷